১২:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাছের ডাল-পালা কাটার বদলে গাছ কর্তন,সরকারি স্কুলের জায়গা দখলের পাঁয়তারা!

গাছের ডাল-পালা ও আগাছা পরিষ্কারের নামে সরকারি স্কুলের জায়গা দখলের পাঁয়তারা বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। শনিবার (৩ মে) বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলে প্রশাসনের সহযোগিতায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়। 

স্থানীয়রা জানান, মতলব দক্ষিণ উপজেলার শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ মতলবগঞ্জ জগবন্ধু বিশ্বনাথ (জে.বি) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মতলব সরকারি হাসপাতাল লাগোয়া পূর্ব-দক্ষিণ কর্ণারে ২৫ শতাংশ জায়গার ফলজ বৃক্ষ কেটে জায়গা দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। গাছ কাটার বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা এসে জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছ কাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জনৈক নেয়ামত উল্লাহর তদারকিতে ৪/৫জন শ্রমিকের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়ের জায়গায় আম, কাঁঠাল, জামরুল, লেবু গাছসহ প্রায় ৩০টি ফলজ বৃক্ষ কেটে ফেলা হয়। ওই স্থানে গাছগুলো কেটে খন্ড খন্ড করে স্তুপ দিয়ে রাখা হয়েছে। 

একাধিক এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের ছাত্ররা জানান, আম, কাঁঠাল ও লেবু গাছগুলোতে ফল ধরা অবস্থায় ছিলো। আমরা প্রায়শই এখানে এসে বিভিন্ন ফল ফলাদি খেতাম। এখন গাছগুলো কেটে ফেলায় আমরা ফল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হলাম।  কাঁঠাল ও আমগুলো বিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও বিগত কয়েক বছর পূর্বে বিদ্যালয়ের সাবেক অফিস সহায়ক মোঃ মোস্তফা মিয়া দীর্ঘদিন বসতঘর স্থাপন করে বসবাস করছিলেন। এখন যদি বিদ্যালয়ের এ জায়গাটির প্রয়োজন তাহলে ইউএনও ও এসিল্যান্ড স্যারের মাধ্যমে জায়গাটি নিয়ম মোতাবেক কাজে লাগাতে পারে। নিয়ম বহির্ভূত কোন কাজ প্রাক্তন ছাত্ররা ও এলাকার লোকজন মেনে নিতে পারছি না। 

এদিকে জায়গার পাশের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে শ্রমিকগণ গাছ কেটেছেন। স্যারকে, কয়েকবার এখানে আসতে দেখেছি। এছাড়াও আমাদের দোকান ভেঙ্গে দু’একদিনের মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিতে বলেছেন। 

গাছ কাটার তদারকির দায়িত্বে থাকা নেয়ামত উল্যাহ বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের (মোঃ মনজিল হোসেন) কথা ও নির্দেশনা মোতাবেক আমি শ্রমিক দিয়ে গাছগুলো কেটে ফেলি। গত চারদিন যাবৎ এ কাজ চলছে। 

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মনজিল হোসেন বলেন, আমি তাদেরকে গাছের ডালা পালা ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে বলেছি। গাছ কাটার কথা বলিনি।

 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি, ইউএনও স্যার প্রশিক্ষণ জণিত কারণে চট্টগ্রামে আছেন। স্যার আসলে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া নেয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমজাদ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের জায়গার গাছ কাটার বিষয়ে সভাপতি হয়েও আমি জানি না। এ রকম কোন ঘটনা ঘটে থাকলে কাজটি করা সঠিক হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ওসি প্রদীপকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া খবরটি গুজব

গাছের ডাল-পালা কাটার বদলে গাছ কর্তন,সরকারি স্কুলের জায়গা দখলের পাঁয়তারা!

Update Time : ০১:৪৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫

গাছের ডাল-পালা ও আগাছা পরিষ্কারের নামে সরকারি স্কুলের জায়গা দখলের পাঁয়তারা বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। শনিবার (৩ মে) বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলে প্রশাসনের সহযোগিতায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়। 

স্থানীয়রা জানান, মতলব দক্ষিণ উপজেলার শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ মতলবগঞ্জ জগবন্ধু বিশ্বনাথ (জে.বি) সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মতলব সরকারি হাসপাতাল লাগোয়া পূর্ব-দক্ষিণ কর্ণারে ২৫ শতাংশ জায়গার ফলজ বৃক্ষ কেটে জায়গা দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। গাছ কাটার বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা এসে জড়ো হওয়ার খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছ কাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জনৈক নেয়ামত উল্লাহর তদারকিতে ৪/৫জন শ্রমিকের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়ের জায়গায় আম, কাঁঠাল, জামরুল, লেবু গাছসহ প্রায় ৩০টি ফলজ বৃক্ষ কেটে ফেলা হয়। ওই স্থানে গাছগুলো কেটে খন্ড খন্ড করে স্তুপ দিয়ে রাখা হয়েছে। 

একাধিক এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের ছাত্ররা জানান, আম, কাঁঠাল ও লেবু গাছগুলোতে ফল ধরা অবস্থায় ছিলো। আমরা প্রায়শই এখানে এসে বিভিন্ন ফল ফলাদি খেতাম। এখন গাছগুলো কেটে ফেলায় আমরা ফল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হলাম।  কাঁঠাল ও আমগুলো বিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও বিগত কয়েক বছর পূর্বে বিদ্যালয়ের সাবেক অফিস সহায়ক মোঃ মোস্তফা মিয়া দীর্ঘদিন বসতঘর স্থাপন করে বসবাস করছিলেন। এখন যদি বিদ্যালয়ের এ জায়গাটির প্রয়োজন তাহলে ইউএনও ও এসিল্যান্ড স্যারের মাধ্যমে জায়গাটি নিয়ম মোতাবেক কাজে লাগাতে পারে। নিয়ম বহির্ভূত কোন কাজ প্রাক্তন ছাত্ররা ও এলাকার লোকজন মেনে নিতে পারছি না। 

এদিকে জায়গার পাশের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে শ্রমিকগণ গাছ কেটেছেন। স্যারকে, কয়েকবার এখানে আসতে দেখেছি। এছাড়াও আমাদের দোকান ভেঙ্গে দু’একদিনের মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিতে বলেছেন। 

গাছ কাটার তদারকির দায়িত্বে থাকা নেয়ামত উল্যাহ বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের (মোঃ মনজিল হোসেন) কথা ও নির্দেশনা মোতাবেক আমি শ্রমিক দিয়ে গাছগুলো কেটে ফেলি। গত চারদিন যাবৎ এ কাজ চলছে। 

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মনজিল হোসেন বলেন, আমি তাদেরকে গাছের ডালা পালা ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করতে বলেছি। গাছ কাটার কথা বলিনি।

 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাবেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি, ইউএনও স্যার প্রশিক্ষণ জণিত কারণে চট্টগ্রামে আছেন। স্যার আসলে প্রয়োজনীয় ব্যব¯’া নেয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমজাদ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের জায়গার গাছ কাটার বিষয়ে সভাপতি হয়েও আমি জানি না। এ রকম কোন ঘটনা ঘটে থাকলে কাজটি করা সঠিক হয়নি।